স্থলে, জলে, অন্তরীক্ষে এমনকি মানবদেহেও খোঁজ মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের। প্লাস্টিকের নাগপাশ থেকে বেরোনো সত্যি দিন কে দিন কঠিন হয়ে উঠছে। মাইক্রোপ্লাস্টিকের কুপ্রভাব সরাসরি পড়ছে গোটা বিশ্বে খাদ্য উৎপাদনের ওপরে। গোটা বিশ্বেই খাবারের পরিমাণ কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা রিপোর্টে। Journal Proceedings of the National Academy of Sciences নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্ট তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান (The Guardian)।
গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে গাছপালার ফটোসিন্থেসিস বা সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া কমে যাচ্ছে। টক্সিক প্লাস্টিক পদার্থের কারণে মাটির গুণমান নষ্ট হয়। সূর্যের আলো পাতায় পৌঁছে দিতে বাধা দেয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। টক্সিক প্লাস্টিক জল ও পুষ্টিকে গাছের ভেতরে পৌঁছে যেতে বাধা দেয়। গোটা বিশ্বে এর ফলে গম, ধান ও ভুট্টার উৎপাদন কমে যাচ্ছে। ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী প্লাস্টিকের দূষণের কারণে এ সব ফসলের গাছ ৪-১৪% মরে যাচ্ছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ এখনই না ঠেকানো গেলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য।
রিপোর্ট বলছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ এখনই না ঠেকানো গেলে ২০৪০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ৪০ কোটি মানুষ খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা রিপোর্টে। ২০২২ সালে ৭০ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়ে। গাছপালার ওপর মাইক্রোপ্লাস্টিকের কুপ্রভাব নিয়ে ১৫৭টি গবেষণা চালানোর পর ৩ হাজারের বেশি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গবেষণা রিপোর্ট তৈরি করা হয়। চিনের নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হুয়ান ঝংয়ের নেতৃত্বে গবেষণা চালানো হয়।
গবেষণা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০৫৮ সালের মধ্যে বিশ্বে জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়াতে পারে প্রায় এক হাজার কোটি। তাই এখনই প্লাস্টিক দূষণ না ঠেকানো গেলে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যেতে পারে।